অল্প পুঁজিতে বাড়িতে বসে ব্যবসা করা সম্ভব?
এই প্রশ্নটি অনেকের মাথায় হর হামেশা এসে থাকে। সোজা কথায় এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ, আজকাল বাড়িতে বসেও অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব।
তবে তার জন্য আপনাকে নিজের উপরে বিশ্বাস রেখে কাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
যাহোক, আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের জন্য অল্প পুঁজির কয়েকটি ঘরোয়া ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করবো, যেগুলো আপনারা বাড়িতে বসে করতে পারবেন।
তার আগে বলে নিচ্ছি, নিচের উল্লেখিত ব্যবসার আইডিয়াগুলো কেবল আপনাদের একটা ধারণা দেওয়ার উদ্দেশ্যে লেখা। অধিকাংশ নতুন উদ্যোক্তা ব্যবসা শুরুর আগে চিন্তায় থাকেন কোন ব্যবসাটি তার জন্য ভালো এবং লাভজনক হতে পারে। আর তাই যাতে আপনাদের এই বাড়তি চিন্তায় না পড়তে হয় এই উদ্দেশ্যে আমার এই আর্টিকেলটা।
{tocify} $title={Table of Contents}
অল্প পুঁজিতে বাড়িতেবসে ব্যবসা করার৮টি আইডিয়া
১. ঘরে বসে খাবার তৈরির ব্যবসা
যদি আপনার রান্নার কাজে দক্ষতা থাকে তবে আপনি সেটিকে কাজে লাগিয়ে খাবার তৈরির ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। আজকাল লোকেরা বাড়িতে বসে থেকে তাদের পছন্দের খাবার অর্ডার করে থাকছেন। এই ব্যবসাটি শুরু করতে আপনাকে তেমন কিছু করতে হবে না, আপনি আপনার খাবারের ব্যবসার জন্য একটি ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ তৈরি করে সেখানে আপনার খাবারের ছবি শেয়ার করতে পারেন। কারো সেগুলো পছন্দ হলে তারা অর্ডার করে নিতে পারবে।
এছাড়াও আপনি চাইলে Foodpanda এর মত ফুড ডেলিভারি অ্যাপগুলোতে রেজিস্ট্রশন করে গ্রাহকদের অর্ডার করা খাবার তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। অনলাইন রিসার্চ করে এই ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
২. নার্সারির ব্যবসা শুরু করুন
বাড়ির আসে পাশে আমরা সকলে বিভিন্ন ফুল ফলের চাষ করে থাকি। এক্ষেত্রে আপনি আপনার বাড়ির আসে পাশে নির্দিষ্ট একটি জায়গা নির্বাচন করে তাতে বিভিন্ন ফুল বা ফলের চারা চাষ করতে পারেন। পরবর্তীতে সেগুলোকে বাজারজাত করতে পারেন। এই ব্যবসায় আপনার তেমন কোনো পুঁজির প্রয়োজন নেই। শুরু করার পূর্বে আপনার স্থানীয় কোনো যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে নার্সারি বিষয়ক ট্রেনিং করে এই বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা নিয়ে নিতে পারেন।
৩. হাঁস–মুরগি এবং মাছ পালন
যারা বিশেষ করে গ্রাম্য এলাকায় বসবাস করেন তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যবসা লাভের হবে। আপনি চাইলে অবসর সময়ে হাঁস–মুরগি এবং মাছ পালন করতে পারেন। অথবা চাইলে এটাকে ফুল টাইম ব্যবসা হিসেবে নিতে পারেন। হাঁস–মুরগি আপনি আপনার বাড়িতে ছোট ঘর তৈরি করে পালন করতে পারবেন আর মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে বাড়ির পার্শ্ববর্তী কোনো জায়গাতে পুকুর খনন করে শুরু করতে পারেন।
শুরুতে এই বিষয়ে আপনার তেমন কোনো দক্ষতা থাকবে না, তাই পূর্বে মাছ বা হাস মুরগির চাষ করেছে এমন কারো থেকে পরামর্শ গ্রহণ করটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
Read More – গ্রামেরব্যবসার আইডিয়া২০২২ – গ্রামেলাভজনক ব্যবসা(৩০+)
৪. নিজের তৈরি জুয়েলারি আইটেম
আজকাল ইমিটেশনের বিভিন্ন ডিজাইনের জুয়েলারি আইটেম মেয়েরা বেশি কিনে থাকে। স্বর্ণ থেকে ইমিটেশনের পণ্য দামে কম হওয়াতে আর ডিজাইনের দিক থেকেও ভালো হওয়াতে সকলের পছন্দের হয়ে থাকে ইমিটেশনের জুয়েলারি পণ্য।
বাড়িতে বসে নিজের হতে নিত্যনতুন ডিজাইনের জুয়েলারি সামগ্রী তৈরি করতে পারেন। তবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষের রুচির অনেক পরিবর্তন হচ্ছে আর তাই এই ব্যবসায় লাভের আশা করতে গেলে নিজের ক্রিয়েটিভিটি কাজে লাগাতে হবে।
৫. কেক তৈরির ব্যবসা
জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সব ধরনের আনন্দময় অনুষ্ঠান উদযাপন করার ক্ষেত্রে আমরা কেক কেটে থাকি। এক্ষেত্রে যদি আপনি কেক বানানোতে এক্সপার্ট থাকেন তাহলে বাড়িতে বসে থেকে আপনি কেক তৈরির ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।
এই ব্যবসাটি লাভজনক করতে অনলাইনে ব্যবসাটি স্থানান্তর করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে তাতে আপনার তৈরি করা কেক এর ছবি এবং ডিটেইলস শেয়ার করতে পারেন। প্রয়োজনে পেইড কেম্পেইন বা পেইড বিজ্ঞাপন করে আপনি আপনার কেক ব্যবসার মার্কেটিং কাজ চালাতে পারেন।
৬. ব্লগিং শুরু করুন
ব্লগিং এর বিষয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। সকল অনলাইন ভিত্তিক পেশার মধ্যে অন্যতম এই পেশাটি। শখ হিসেবে ব্লগিং এর বিজনেস হিসেবে ব্লগিং করার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যারা ব্লগিং পেশাকে একটি ব্যবসা হিসেবে নিয়েছেন তারা ব্লগিং এর বিষয়ে অনেক সিরিয়াস হয়ে কাজ করে থাকেন। এবং প্রতি মাসে রোয়ালটি ইনকাম করে থাকে।
আপনার যদি কোনো বিষয়ের উপর লেখালেখি করার দক্ষতা থাকে তবে সেটিকে কাজে লাগিয়ে আপনি ব্লগিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। গুগল এডসেন্স, এফিলিয়েট মার্কেটিং, পেইড প্রমোশন ব্লগ থেকে অর্থ আয় করার অন্যতম কয়েকটি উপায়।
৭. আচার তৈরির ব্যবসা
ছোট থেকে বড় সকলেই প্রায় আচার খেতে পছন্দ করে থাকে। তবে সচরাচর প্যাকেট হিসেবে বাজারে যে আচার পাওয়া যায় তার থেকে যদি হাতে বানানো আচার পাওয়া যায় তবে সেগুলোর প্রতি বেশি আগ্রহ থাকে মানুষের।
যদি আপনি সুস্বাদু আচার তৈরি করতে পারেন তবে আপনি গ্রামে বা শহরে সব জায়গায় আচার বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন। এই ব্যবসাটি সল্প বিনিয়োগে অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা।
৮. অনলাইন কোর্স
যদিও এক সময় অনলাইনে কোনো ধরনের কোর্স পাওয়া যেতে না বা কোর্স করার তেমন কোনো নিয়ম প্রচলিত ছিলনা। কিন্তু ইন্টারনেটের ব্যবহার উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে অনলাইন কোর্স এর চাহিদা এখন অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। এখন মানুষ কোনো বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য অনলাইন থেকে কোর্স কিনে থাকে। আর তাই আপনার যদি কোনো বিষয়ে দক্ষতা থাকে তবে আপনি সেটিকে কোর্স হিসেবে তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।
শেষ কথা
বন্ধুরা আজকে আমরা অল্প পুঁজিতে বাড়িতে বসে ব্যবসা করার ৮ টি লাভজনক আইডিয়া সম্পর্কে জানলাম। শুরুতেই আপনাদের বলেছি, আর্টিকেলটা কেবল আপনাদের একটা ধারণা দেওয়া জন্য লিখা। আশা করছি আপনাদের সেই ধারণা দিতে পেরেছি।
আর্টিকেল বিষয়ে কোনো প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। ভালো লাগলে শেয়ার করে দিন।